একটি শিক্ষণীয় ইসলামিক গল্প
একটি শিক্ষণীয় ইসলামিক গল্প
,
অন্ধকার ঘরে শুয়ে আছে রাহাত । আজকে
সারাদিন অনেক খাটনি গেছে, প্রচণ্ড ক্লান্ত,
কখন যে বিছানায় শুয়ে থাকতে থাকতে ঘুমিয়ে
গেছে টেরও পায় নি। এখন ঘুম থেকে উঠতে ইচ্ছা
করছে না। রান্নাঘর থেকে মা ডাকলেন,
“রাহাত, আর কত ঘুমাবি? আলসেমির একটা সীমা
থাকা দরকার! ওঠ এখন। আয় চা খা।“
মোবাইলে সময় দেখল রাহাত। তারপর অনেক
কষ্টে নিজেকে টেনে উঠিয়ে অজু করতে গেলো।
মাগরিবের আজান দিয়েছে অনেকক্ষণ হয়েছে,
আর বেশী সময় নেই। নাহ, এতো দেরি করা ঠিক
হয় নি। বালতিতে হাত পা ডুবিয়ে ২ সেকেন্ডে
অজু করলো। তারপর তাড়াহুড়ো করে নামাজ শুরু
করলো।
“আল্লাহু আকবার!”
“আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামিন” … দুপুরে
কিছু খাইনি, ক্ষুধা লেগেছে।
“কুলহুওাল্লাহু আহাদ… “ আম্মু কি চায়ের সাথে
কিছু নাস্তা বানিয়েছে?
…
“সুবহানা রাব্বিয়াল আলা” … সেজদায় শুয়ে
থাকতে ইচ্ছা করছে…
হঠাৎ মাটি অসম্ভব জোরে কেঁপে উঠলো। সেজদা
থেকে উলটিয়ে পড়ে গেল রাহাত। ব্যথায় কুঁকড়ে
গেল শরীর। মুখে কীসের যেন গুড়ো পড়ছে। উপরে
তাকিয়ে দেখল, বাড়ির ছাদ ভেঙ্গে পড়ছে! ছুটে
ও ঘর থেকে বেরুলো। বেরিয়ে যা দেখল তাতে
ওর চোখ প্রায় কপালে উঠে যাওয়ার অবস্থা। ওর
বাড়ি ঘর এলাকা কি করে যেন অদৃশ্য হয়ে গেছে।
সেখানে আছে এক বিশাল ধবধবে সাদা মাঠ।
সেই মাঠে দাঁড়িয়ে আছে পিপড়ার মতো
পিলপিল করা মানুষ।
যদিও নিজের চোখে দেখতে হবে ভাবেনি, এসব
দৃশ্যের বর্ণনা ও বইয়ে পড়েছে। তাই ব্যাপারটা
বুঝতে ওর দেরি হল না – সে চোখের সামনে
কেয়ামত দেখতে পাচ্ছে।
বুকটা ধক করে উঠলো। এখনই কি আমার হিসাব
হবে? এতো তাড়াতাড়ি? কিছুই তো করার সময়
পেলাম না। কত ভুল করেছি যেগুলোর ক্ষমা
চাওয়া হয়নি। কত সময় নষ্ট করেছি, কত কিছু করতে
পারতাম, করা হয় নি।
নাহ, তবুও রাহাত প্রতিদিন নামাজ পড়েছে।
কেয়ামতের দিন সর্বপ্রথম হিসাব হবে
নামাজের। নামাজ ঠিক তো সব ঠিক।
হিসাব শুরু হয়ে গেছে। শীঘ্রই ওর পালা …
“রাহাত মাহমুদ।“
মানুষের ভিড় দুই ভাগ হয়ে ওকে যাবার রাস্তা
করে দিলো। ফেরেশতারা ওর খাতার হিসাব
করছে। ওর পাল্লা ভারি হয়ে আসছে! হায় হায়!
এতো গুনাহ করেছে ও বুঝতেই পারে নি। শেষে
ওকে স্বীকৃতি দাওয়া হল জাহান্নামের
বাসিন্দা বলে!
দুইজন ফেরেশতা ওর কপালের চুল ধরে টেনে
নিয়ে যাচ্ছে। সবাই তাকিয়ে আছে ওর দিকে।
এক অবিশ্বাস্য ভয়ংকর আগুনের দিকে ওকে
নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
এই আমার পরিণতি! এ কি করে সম্ভব, আমি তো
নামাজ পড়েছি ! আমার নামাজ আমাকে
বাঁচাচ্ছে না কেন? আমি যে এতো নামাজ
পড়েছি সব বৃথা? আমার নামাজ… আমার নামাজ !
ফেরেশতা দুজন তাকে তুলে আগুনে নিক্ষেপ
করলো। ওর বুক ফেটে বের হল অমানবিক আর্তনাদ
– “ না !”
জাহান্নামের আগুনের দিকে পড়তে লাগলো
রাহাত।
হঠাৎ কে যেন ওর হাত ধরে ফেলল, টান দিয়ে
উপরে উঠালো তাকে।
স্বস্তিতে কেঁদে দিলো রাহাত। “এই জঘন্য
পরিণতি থেকে আমাকে বাঁচালে, কে তুমি?”
“আমি তোমার নামাজ।“
“ওহ!” হঠাৎ রাগ হল রাহাতের।
“এতো দেরি হল কেন তোমার? আমি তো প্রায়
জাহান্নামে পড়েই গিয়েছিলাম!”
“তুমি দেরি করতে না নামাজ পড়তে? শেষ সময়
পার হবার বিন্দুমাত্র আগে? তাই আমারও দেরি
হয়েছে তোমাকে বাঁচাতে, জাহান্নামে পড়ার
বিন্দুমাত্র আগে!”
চোখ খুলল রাহাত। চোখে সবুজ দেখছে। বুঝতে
একটু সময় লাগলো যে এটা ওর জায়নামাজের
অংশ। সেজদা থেকে মাথা উঠালো সে।
আমি বেঁচে আছি!
আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার!
এশার আজান দিচ্ছে। ক্ষুধা টুধা ভুলে মসজিদের
দিকে দৌড় দিলো রাহাত। এরপর আর কোনদিন
নামাজে দাড়াতে ওর দেরী করার চিন্তাও
করবে না সে, এই প্রতিজ্ঞা করলো মনে মনে।
অতএব দুর্ভোগ সেসব নামাযীর, যারা তাদের
নামাজের ব্যাপারে অমনোযোগী। [সুরা আল-
মা’উন, ১০৭:৪-৫]
,
অন্ধকার ঘরে শুয়ে আছে রাহাত । আজকে
সারাদিন অনেক খাটনি গেছে, প্রচণ্ড ক্লান্ত,
কখন যে বিছানায় শুয়ে থাকতে থাকতে ঘুমিয়ে
গেছে টেরও পায় নি। এখন ঘুম থেকে উঠতে ইচ্ছা
করছে না। রান্নাঘর থেকে মা ডাকলেন,
“রাহাত, আর কত ঘুমাবি? আলসেমির একটা সীমা
থাকা দরকার! ওঠ এখন। আয় চা খা।“
মোবাইলে সময় দেখল রাহাত। তারপর অনেক
কষ্টে নিজেকে টেনে উঠিয়ে অজু করতে গেলো।
মাগরিবের আজান দিয়েছে অনেকক্ষণ হয়েছে,
আর বেশী সময় নেই। নাহ, এতো দেরি করা ঠিক
হয় নি। বালতিতে হাত পা ডুবিয়ে ২ সেকেন্ডে
অজু করলো। তারপর তাড়াহুড়ো করে নামাজ শুরু
করলো।
“আল্লাহু আকবার!”
“আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামিন” … দুপুরে
কিছু খাইনি, ক্ষুধা লেগেছে।
“কুলহুওাল্লাহু আহাদ… “ আম্মু কি চায়ের সাথে
কিছু নাস্তা বানিয়েছে?
…
“সুবহানা রাব্বিয়াল আলা” … সেজদায় শুয়ে
থাকতে ইচ্ছা করছে…
হঠাৎ মাটি অসম্ভব জোরে কেঁপে উঠলো। সেজদা
থেকে উলটিয়ে পড়ে গেল রাহাত। ব্যথায় কুঁকড়ে
গেল শরীর। মুখে কীসের যেন গুড়ো পড়ছে। উপরে
তাকিয়ে দেখল, বাড়ির ছাদ ভেঙ্গে পড়ছে! ছুটে
ও ঘর থেকে বেরুলো। বেরিয়ে যা দেখল তাতে
ওর চোখ প্রায় কপালে উঠে যাওয়ার অবস্থা। ওর
বাড়ি ঘর এলাকা কি করে যেন অদৃশ্য হয়ে গেছে।
সেখানে আছে এক বিশাল ধবধবে সাদা মাঠ।
সেই মাঠে দাঁড়িয়ে আছে পিপড়ার মতো
পিলপিল করা মানুষ।
যদিও নিজের চোখে দেখতে হবে ভাবেনি, এসব
দৃশ্যের বর্ণনা ও বইয়ে পড়েছে। তাই ব্যাপারটা
বুঝতে ওর দেরি হল না – সে চোখের সামনে
কেয়ামত দেখতে পাচ্ছে।
বুকটা ধক করে উঠলো। এখনই কি আমার হিসাব
হবে? এতো তাড়াতাড়ি? কিছুই তো করার সময়
পেলাম না। কত ভুল করেছি যেগুলোর ক্ষমা
চাওয়া হয়নি। কত সময় নষ্ট করেছি, কত কিছু করতে
পারতাম, করা হয় নি।
নাহ, তবুও রাহাত প্রতিদিন নামাজ পড়েছে।
কেয়ামতের দিন সর্বপ্রথম হিসাব হবে
নামাজের। নামাজ ঠিক তো সব ঠিক।
হিসাব শুরু হয়ে গেছে। শীঘ্রই ওর পালা …
“রাহাত মাহমুদ।“
মানুষের ভিড় দুই ভাগ হয়ে ওকে যাবার রাস্তা
করে দিলো। ফেরেশতারা ওর খাতার হিসাব
করছে। ওর পাল্লা ভারি হয়ে আসছে! হায় হায়!
এতো গুনাহ করেছে ও বুঝতেই পারে নি। শেষে
ওকে স্বীকৃতি দাওয়া হল জাহান্নামের
বাসিন্দা বলে!
দুইজন ফেরেশতা ওর কপালের চুল ধরে টেনে
নিয়ে যাচ্ছে। সবাই তাকিয়ে আছে ওর দিকে।
এক অবিশ্বাস্য ভয়ংকর আগুনের দিকে ওকে
নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
এই আমার পরিণতি! এ কি করে সম্ভব, আমি তো
নামাজ পড়েছি ! আমার নামাজ আমাকে
বাঁচাচ্ছে না কেন? আমি যে এতো নামাজ
পড়েছি সব বৃথা? আমার নামাজ… আমার নামাজ !
ফেরেশতা দুজন তাকে তুলে আগুনে নিক্ষেপ
করলো। ওর বুক ফেটে বের হল অমানবিক আর্তনাদ
– “ না !”
জাহান্নামের আগুনের দিকে পড়তে লাগলো
রাহাত।
হঠাৎ কে যেন ওর হাত ধরে ফেলল, টান দিয়ে
উপরে উঠালো তাকে।
স্বস্তিতে কেঁদে দিলো রাহাত। “এই জঘন্য
পরিণতি থেকে আমাকে বাঁচালে, কে তুমি?”
“আমি তোমার নামাজ।“
“ওহ!” হঠাৎ রাগ হল রাহাতের।
“এতো দেরি হল কেন তোমার? আমি তো প্রায়
জাহান্নামে পড়েই গিয়েছিলাম!”
“তুমি দেরি করতে না নামাজ পড়তে? শেষ সময়
পার হবার বিন্দুমাত্র আগে? তাই আমারও দেরি
হয়েছে তোমাকে বাঁচাতে, জাহান্নামে পড়ার
বিন্দুমাত্র আগে!”
চোখ খুলল রাহাত। চোখে সবুজ দেখছে। বুঝতে
একটু সময় লাগলো যে এটা ওর জায়নামাজের
অংশ। সেজদা থেকে মাথা উঠালো সে।
আমি বেঁচে আছি!
আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার!
এশার আজান দিচ্ছে। ক্ষুধা টুধা ভুলে মসজিদের
দিকে দৌড় দিলো রাহাত। এরপর আর কোনদিন
নামাজে দাড়াতে ওর দেরী করার চিন্তাও
করবে না সে, এই প্রতিজ্ঞা করলো মনে মনে।
অতএব দুর্ভোগ সেসব নামাযীর, যারা তাদের
নামাজের ব্যাপারে অমনোযোগী। [সুরা আল-
মা’উন, ১০৭:৪-৫]
5 comments:
Khub sundor golpo
Valo
Nice story
Nice story. I like this islamic kahini
Such a fine islamic bangla blog website. I like this Golpo
Post a Comment